আমি বড় হয়েছি কলকাতায়। আমার ছেলেবেলা কেটেছে রাসবিহারী, কালীঘাট, হাজরা, মুদিয়ালী, সাউদার্ন এভিনিউ চেতলা - মানে এই সব জায়গা-তেই, কারণ অধিকাংশ বন্ধু বান্ধব রাই থাকতো এই সব জায়গাতে। আমি পড়েছি দক্ষিণ কলকাতার একটি প্রাইভেট স্কুলে। না না, বেশি দূরে ছিল না। মর্নিং স্কুল ছিল। ভোর-ভোর উঠতে হতো চিরকাল। উঠতে অসুবিধে হতো শুধু বর্ষাকালের দিনগুলো তে।
স্কুলটা আমার বাড়ির থেকে হাঁটা পথেই। স্কুলের নাম নবনালন্দা হাই স্কুল। সাউদার্ন এভিনিউ এর শুরুতেই হরিণঘাটা ডেয়ারী মিল্ক ডিপোর একদম পাশেই। ক্লাস-এ বরাবরই বিশেষ মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করতে হতো। শিক্ষক/শিক্ষিকা-দের আমরা চিরকালই বলতাম আন্টি বা স্যার। ম্যাডাম-এর একদমই চল ছিল না যে। পরীক্ষার জন্য কোনোদিন সিলেক্ট করে পড়ার নিয়ম ছিল না। তাই, যা আমাদের পাঠ্যক্ৰমে থাকতো পুরো তাই পড়তাম মন দিয়ে | আন্টিরা বলতেন যদি পুরোটা পড়ি, তাহলে একটা বিশেষ সুবিধে থাকবে - পরীক্ষায় পছন্দ মতন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার।
৭তম শ্রেণী থেকে শুরু করে ১০ম অবধি টানা ক্লাস মনিটর এর স্থানটি ছিল আমার মোটামুটি পাকা। আমাদের ক্লাশে ছিল তিনটি সেকশন - এ, বি এবং সি। আমি ছিলাম এ-তে। স্কুলে টিফিন হতো সকাল ১০ টা নাগাদ। টিভিতে যেমন দেখায়, টিফিনের বেল বাজলেই দৌড়ে ক্লাস থেকে সবাই বেরিয়ে যে যার ইচ্ছে মতন নাচ গান শুরু করে করিডোরে, - সেরকম একদম-ই চল ছিল না। বেল বাজলেই টিচার গলার স্বর উচু করে আমরা কিছু বলার আগেই বলেই উঠতেন “Quiet please” - শুনে শুনে আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছিলো এক্কেবারে। টিফিনের সময়ে, একটা আলু-কাবলিওয়ালা আসতো রোজ। হাত বাড়িয়ে কাগজের ঠোঙায় করে আলু কাবলি, ঘুগনি বিক্রি করতো খুবই মুখরোচক। আলুর উপরে ঝুরিভাজা আর দিত একটু লেবুর রস। আর একজন মাঝে মাঝে আসতো - সে হল আমাদের মেট্রো ডেয়ারি থেকে আইসক্রিম নিয়ে। মারামারি বাঁধত প্রায় - কে আগে আইসক্রিম কিনবে। স্কুলের দারোয়ান একদিন বলেই বসলো - বাড়িতে কি আইসক্রিম পাচ্ছ না? এতো হুড়োহুড়ি কিসের?
মোটামোটি ভালো আঁকতাম বলে আমার স্কু স্টাফরুমের দেওয়ালে দুটো অয়েল পেইন্টিং ঝোলানোর সুযোগ পেয়েছিলাম আমি। সোনারপুরে বেবিদির কাছে আঁকা শিখতাম শনিবার শনিবার করে। হঠাৎ, রাসবিহারী থেকে সোনারপুর? তাও আবার আঁকা শিখতে? কেন ভাবছো? তাহলে বলি, সোনারপুরে আমার মামার বাড়ি যে। এখন ভাবি কলকাতায় বড় হলেও গ্রাম বাংলা’র সঙ্গে যোগাযোগ আমার বরাবরই ছিল। তখন সোনারপুর ছিল গ্রাম, বর্তমানে বৃহত্তর কলকাতা’র অধীনে।আমি চিকেন খেতে ভালোবাসতাম বলে, দিদা প্রতি শনিবার চিকেন রান্না করেই রাখতো। আগে আঁকা শেখা-টা সেরে নিয়ে যেতাম মামার বাড়ি। প্রথমে নারায়ণ ঠাকুর, শিব ঠাকুর প্রণাম করতাম, তারপরে একটু গল্প করতাম। আমাদের একটা ছোট্ট পুকুর ছিল। মাঝেমাঝে সেই পুকুরে মাছ ধরতে যেতাম। ছিপ-টিপ্ আটার গুলি - সব রেডি রাখতো মামা। খুব মজা হতো। বাগানে নারকোল গাছ, বাঁশ গাছ, খেঁজুর গাছ, আম গাছ দেখতে দেখতে কখন যে সময় চলে যেত, বকাও খেয়েছি অনেকবার। বিশেষ করে তাল গাছের তলায় দাড়িয়ে কবিতা-টাও আওড়েছি -
তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে উকি মারে আকাশে।
মনে সাধ, কালো মেঘ ফুঁড়ে যায়, একেবারে উড়ে যায়; কোথা পাবে পাখা সে?
এসবের পর, খেয়েদেয়ে শনিবার দুপুরের ঘুম দিতে না দিতে আসতো শঙ্করদা। ঠিক দুপুর ৩-টের সময়ে। শঙ্করদা কে? হে হে, বলছি। আমার আবৃত্তি’র টিচার। আমাকে শিখিয়েছে জীবনে সময়নিষ্ঠা কাকে বলে। ৩-টে বাজলেই বেল বাজেতো। বাইসাইকেল-এর চাকাটা চেন দিয়ে বেঁধে ঘরে ঢুকতো শঙ্কর-দা। খুব অসুবিধে হতো আমার। ঘুমঘুম চোখ, ক্লান্তি, তার মধ্যে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বড়বড় কবিতা মুখস্থ করে, গলার স্বরের উর্ধপতন করে আবৃত্তি করতে হতো যে!! কষ্ট হলেও কিন্তু আমি পাঠ্যক্ৰমে যা থাকতো সবই শিখেছিলাম প্রত্যেক বছর। ক্লাস ৬-এ আমি রবীন্দ্রাভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও চন্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেলাম অঙ্কন-বিভাকর, আবৃত্তি-বিভাকর, অঙ্কন-প্রভাকর এবং আবৃত্তি-প্রভাকর -এই চারটি শংসাপত্র একই সাথে। খুব ইচ্ছে করেছিল সেইদিন আমি শিল্পী হবো। এর মধ্যে উল্লেখ্য, চন্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কন পরীক্ষার দিন আমার খুব রাগ হয়েছিল পরীক্ষকের উপরে। পরীক্ষার একটা অংশ ছিল প্রদর্শনী | যা যা আঁকা আমি বাড়িতে এঁকেছি, সেই গুলো দেখাতে হতো সেই অংশে। পাতা উল্টে দেখতে দেখতে, উনি আমার সর্বশ্রেষ্ঠ অয়েল-পেইন্টিংটি হঠাৎ করে চেয়ে বসলেন - বললেন “আমাকে এটা দিতে পারবে?” বেবিদি বলে দিয়েছিলো “মাস্টার - এর কোনো ছবি ঘদি অত্যন্ত পছন্দ হয়, উনি চাইতে পারেন, তোরা কেউ না বলিস না যেন, দিয়ে দিস”। ঠোঁটের কোণে “না” শব্দটি লুকিয়ে রেখে এক রাশ হাঁসি নিয়ে বললাম স্যারকে, “নিশ্চই”। এক-দু মাস পরে, একে একে সব কটি শংসাপত্র বাড়িতে এসে গেলো চিঠি মারফত। ওগুলি নিয়ে, সনক মিষ্টান্ন ভান্ডার থেকে মিষ্টি আর দই কিনলাম আমরা সোনারপুর স্টেশন মোড় থেকে। গেলাম শঙ্করদাকে দিতে। বোধহয় জীবনে প্রথম বার ডুমুরের তরকারি খেয়েছিলাম সেইদিন। বেবিদি বললো “তুই এখন সারা ভারতবর্ষে যেখানে খুশি ট্রেনে করে যেতে পারবি মাস্টার হয়ে, খরচ ওরাই দেবে”। এর জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, একটু সময় লাগবে - আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম শুনে।
পরবর্তীকালে বেবিদির কাছে আঁকা আর শঙ্করদার কাছে আবৃত্তি ছাড়তে হলো দুটো কারণে আমাকে। এক - আমি বয়েস আন্দাজে অনেক কম বয়েসে ওই সংশাপত্রগুলি পেয়েছিলাম। আমাকে পরের পরীক্ষাগুলোর জন্য অপেক্ষা করতে হতো অন্তত দু’বছর। দুই - পড়ার চাপও বাড়লো ৭-ক্লাস থেকে। আমার আর মাস্টার হয়ে কোথাওই যাওয়া হলো না। ভেবেছিলাম, আমাকে আঁকার তত্ত্বের যে শক্ত-শক্ত প্রশ্নগুলো মাস্টারমশাইরা করতো, আমি তার থেকে সহজ প্রশ্ন করবো ছাত্রদের আমি যখন পরীক্ষা নেবো। কারোর কাছে তার আঁকা ছবি চাইবো না কোনোদিন, ইত্যাদি। আকা, আবৃত্তি প্রাকটিসগুলো অনেকটাই সময় পাওয়ার উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়লো। যাই হোক! আমার স্কুলে জীবন বিজ্ঞান বা বায়োলজি এবং ফিজিক্যাল সায়েন্সএ আঁকায় কোনোদিন কোনো অসুবিধে হয়নি এই শেখার কারণে।
ক্লাস ৭-এ মজার একটা ঘটনা ঘটেছিলো। বোধিসন্ত্ব বলে একটা বন্ধু একটু লম্বা চুল রাখতো। ক্লাসের সব থেকে রাগি আন্টি ছিলেন রেশমা-আন্টি। ইংলিশ পড়াতেন। সবাই ভয় পেতাম আমরা উনি বারণ করেছিলেন বোধিসত্ত্বকে লম্বা চুল রাখতে। ছেলেটিও কথা শোনার নয়। আন্টি একদিন সকালে কোনো একটি প্রশ্ন করায় এবং বোধিসত্ত্ব সেটি উত্তর দিতে না পারায়, নিজের চুল-এর ক্লিপ টা খুলে লাগিয়ে দিলেন বোধিসত্বর মাথায় - বললেন “নাও, যত পারো স্টাইল মারো”। তারপরে থেকে বোধিসত্ত্বর আর লম্বা চুল রাখা হলো না। আচ্ছা, আমাদের অল্পদিনের জন্য আসা পিটি-টিচার তিওয়ারি স্যারের কথা মনে পরে গেলো। উনি রোজ একতলায় দাড়িয়ে থাকতেন যখন প্রেয়ারের পরে আমরা সারিবদ্ধ ভাবে উপরে উঠতাম এক এক জন করে। দুটি কাজ উনি করতেন। যারা লাইন ভাঙার চেষ্টা করতো, হুড়োহুড়ি জুড়তো বা যাদের জুতো ঠিক ভাবে পালিশ করা থাকতো না - তাদের তিনি লাইন থেকে বের করে আলাদা করে দাঁড় করিয়ে রাখতেন।
ক্লাস ৮-এর সব থেকে মনে রাখার মতো ঘটনা ছিল - আমার ভার পড়েছিল প্রেয়ার লিড করা। প্রেয়ার ঠিক করে মনে রেখে, সকাল ৭-টার আগে দাঁড়িয়ে পড়তে হতো আমাদের স্কুলের এর ভিতরে অডিটোরিয়াম এর সামনে। আমি অবশ্য ব্যাগটা আগে ক্লাস এ রেখে আসতাম। কঠিন ব্যাপার আসলে প্রেয়ার মনে রাখাটা ছিল না একদমই। কঠিন থেকে কঠিনতর ব্যাপারটা ছিল - আমার চোখের সামনে আমার দিকেই মুখ করে দাড়িয়ে থাকা বন্ধুরা যে প্রাণপণ চেষ্টা করে যেত আমাকে প্রেয়ার টাইম-এ হাসাবার আর বকা খায়ানোর নানা রকম মুখের অঙ্গভঙ্গি করে, সেই হাসিটা চাপা। মাঝেমাঝে মনে হতো এই বোধয় হেসে ফেললাম, যাহ। আর একটা মজার বিষয়, বাংলা পড়াতেন অপর্ণা-ন্টি, আমার সব থেকে প্রিয় ছিল “পদ্দা-নদীর মাঝি” | কতবার যে গল্প-টা পড়েছি !!! অপর্ণাআন্টি-কে বহুবার বলতে শুনেছি “যাদের ভালো লাগছে না, বেরিয়ে যেতে পারো”। মজার বিষয়টি হলো, একদিন যখন উনি এই কথাটা বললেন, ৩-৪ টি বন্ধু সত্যি সত্যি বেরিয়ে যাচ্ছিলো। ওরা উঠে যেই না ক্লাসের বাইরে পা রেখেছে, আন্টিও উঠলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন - কোথায় যাচ্ছ - সাহসটা তো কম নয় তোমাদের। চুপচাপ ক্লাসে বসে যা পড়াচ্ছি তাই মন দিয়ে শোনো। তোমাদের ভালোর জন্যই বলছি"। ওরা বুঝতেই পারেনি আন্টি কথাটা এমনি এমনি বলতেন।
ক্লাস ৯-এর সব থেকে উল্লেখ্য বিষয় হলো আমি নিয়েছিলাম অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে এড্ডিশনাল ম্যাথমেটিক্স। নম্বর ভালো উঠতো এবং আমার ভালো লাগতো বলেই আগে থেকে ঠিক করেছিলাম নেবো “এড্ডিশনাল ম্যাথমেটিক্স”। পম্পা-অন্টি পড়াতেন। খুবই নাম করা টিচার। থাকতেন বেহালাতে। স্কুলের সেশন শুরু হওয়ার পরপর-ই আমাদের কে প্রেয়ার গ্রাউন্ড-এ নিয়ে গিয়ে আন্টিরা বললেন - যারাযারা ম্যাথমেটিক্স নেবে তারা লেফট মোস্ট লাইনে দাড়াও। যারাযারা বায়োলজি নেবে রাইট মোস্ট লাইনে। বাকিরা মিডল লাইনে দাড়াও। মনেও পড়ছে না, আরকি আডিউশনাল সাবজেক্ট ছিল আমাদের চয়েস-এ।এর মধ্যে মনে পড়লো, যখন আমরা প্রেয়ার গ্রাউন্ডে দাঁড়ালাম, আমার এক বন্ধু, রুপা নাম তার। সে এসে আমার ঠিক পিছনে দাড়িয়েছিলো। আমাকে বললো, "আমার ভয়ভয় করছে, আন্টি হয়তো আমাকে এড্ডিশনাল ম্যাথমেটিক্স নিতে দেবেন না দেখতে পেয়ে গেলে। "আমি বললাম “কেন রে?”। বললো “আমি এমনি ম্যাথেমেটিক্সে খুব কম পেয়েছি যে।” বলতে বলতেই শাস্বতী-অন্টি একটু জোর গলায় বলে উঠলেন “রুপা, তুমি এই লাইনে কেন? সরে যাও বায়োলজিতে বা থার্ড লাইনে। পারবে বলে মনে হয় তোমার?” রুপা কিছু যেন বলার সাহসই পেলো না। একটু কাঁচুমাচু মুখ করেই যেন বলতে চেষ্টা করলো - আন্টি আমি এইখানেই থাকি না। তারপরে কি হয়েছিল জানি না, তবে রুপা কে আড্ডিশনাল ম্যাথমেটিক্স ক্লাসে দেখেছি বলে মনে পড়ছে না পরবর্তীকালে।
১৯৯৮ এ লিখেছিলাম মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রত্যেকটি বিষয়ের মৌখিক পরীক্ষা হয়ে গিয়েছিলো আগেই। মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে, স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো - প্রায় এক মাস আগেই। ইতিহাস, ভূগোলের বইগুলি একসাথে হাতে ধরা যেত না, এতো মোটা ছিল। বই বাঁধাতে হয়েছিল, কারণ হাত থেকে হঠাৎ ফসকে পরে গেলে ছিড়ে যাওয়ার একটা ভয় থাকতো। ইতিহাস পড়াতেন আমাদের অতি প্রিয় ভাস্বতী-আন্টি। উনি বলে দিয়েছিলেন ইতিহাসে কত নম্বরের প্রশ্নের কত পাতা লিখতে হবে সর্বনিম্ন। যেমন ২-একটি অনুচ্ছেদ, ৯-নম্বর - ৩ পাতা, ২০ নম্বর - ৬-পাতা। নানা, সব বিষয়ে একই চালাকি চলতো না। ভূগোল এর ক্ষেত্রে ইন্সট্রাকশন ছিল ‘যত পারবে আঁকবে, আগে উত্তর গুলো লিখে নেবে সব একেসাথে, জায়গা ছাড়তে ছাড়তে যাবে, কাটাকুটি বেশি করবে না ইত্যাদি’। জীবন বিজ্ঞানেও তাই ছিল বহাল। মোটামুটি ভালোই হলো পরীক্ষাগুলো। গড়িয়াহাটে সিট পড়েছিল। বেশি দূর নয়। দেখতে দেখতে আমার স্কুল-জীবনের ইতি হলো। আমাদের স্কুলে তখন ১১-১২ ক্লাস ছিল না। তাই, জানতাম যে হাই স্কুলে পড়তে অন্যত্র যেতে হবে।
স্কুলের স্মৃতিগুলো রয়ে গিয়েছে মনের মনিকোঠায় অন্তর্নিহিত। বন্ধুরা রয়ে গিয়েছে হোয়াটস্যাপ গ্রুপ’এ। এখন টিফিনের সময়ে আর কাবলিওয়ালাটা আসেনা। আমি বার দুয়েক চেষ্টা করেছি দাড়িয়ে দেখতে কি হয় টিফিন টাইম-এ। যেই গেটটা ছিল, সেইটা তো এখন আর নেই! অনেক উচু একটা সলিড আইরন-এর গেট বসানো হয়েছে। দারোয়ান বললো, বাচ্চাদের নিরাপত্তার জন্যই এই ব্যবস্থা। বন্ধুরা আমাকে এখনো খ্যাপায় প্রেয়ার এর কথা মনে করিয়ে দেয়। আন্টিদের আমি খুব’ই প্রিয়পাত্র ছিলাম। সেই নিয়েও এখনো কেউ কেউ কটাক্ষ করে বসে মাঝেমাঝে। আমিও কিছু হাসির কথা, মজার কথা মনে পড়লে হোয়াটস্যাপ’এ লিখি। ওরাও অনেক কিছু মনে করিয়ে দেয় আমাকে। মানুষের মনটাও বড় অদ্ভুত। সব কিছু মনে রাখতে পারে না। মোটের উপরে, খুব’ই আনন্দের দিন কাটিয়ে এসেছি স্কুল জীবনে। আবার যদি কোনোদিন স্কুলে পড়ার সুযোগ পাই, আমি এই স্কুলেই পড়বো।